আরাফাত হোসেন :: পৃথিবীর সর্বত্রই নববর্ষ একটি প্রচলিত সংস্কৃতিধারা, আদিকাল থেকেই যে কোন বছরের প্রথম দিনটি নববর্ষ নামে পরিচিত হয়ে আসছে। পহেলা বৈশাখ বাংলা সনের প্রথম দিন। এটি বাঙ্গালী জাতীর একটি সর্বজনীন লোক উৎসব। আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেওয়া হয় এ দিনটিকে, মূলত অতীতের ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতায় গ্লানি ভুলে নতুন করে সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনার জন্য উযযাপিত হয় নববর্ষ। পহেলা বৈশাখে বাংলার জনসমষ্টি অতীতের সুখ-দু:খ ভুলে গিয়ে নতুনের আহবানে সাড়া দিয়ে ওঠে। তারা জানে এ নতুন অনিশ্চিতের সুনিশ্চিত সম্ভাবনাময়তায় পরিপুর্ণ। তাই মন সাড়া দেয়, নতুনকে গ্রহন করার প্রস্তুতি নেয়, আর সেদিন প্রাত্যহিক কাজকর্ম ছেড়ে দিয়ে ঘরবাড়ি ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে। আটপৌরে জামাকাপড় ছেড়ে ছেলেরা পরে পাঞ্জাবী, পায়জামা, পাগড়ী আর মেয়েরা পরে সাদা আর লাল পাঁড়েল শাড়ি। সেদিন তারা সাজে পুরোপুরি বাঙ্গালী মেয়ের মতো। তারা ঘুরতে যায় আত্বীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের সাথে দেখা করে পানাহারে মেতে ওঠে। এ সময় নতুন সূর্যকে স্বাগত জানিয়ে কোনো উদ্যানে বা কোন লেকের ধারে নগরবাসীরা সমবেত হঁয়ে নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এদিন সকল শ্রেনীর এবং সকল বয়সের মানুষ ঐতিহ্যবাহী বাঙ্গালী পোশাক পরে মিলিত হয় বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। যেমন:- বাংলা একাডেমী, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, জাতীয় জাদুঘর, নজরুল একাডেমী প্রভৃতি বিভিন্ন কমর্সূচী গ্রহন করে থাকে। এছাড়াও এদেশের স্থানীয় কতগুলো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলা নববর্ষের বৈশিষ্টসমূহ ফুটে ওঠে। যেমন; মেঘের কাছে জল করা "বার্ষিক মেলা বা বৈশাখী ভিক্ষা মেলা" হালখাতা ইত্যাদি। এই বিচিত্র আনন্দ অনুষ্ঠানে, কেনাবেচার বানিজ্যিক লেনদেনেও বৈশাখের প্রীতির স্পর্শ লাগে। এই পূন্য দিনেই শুরু হয় ব্যবসায়ীদের হালখাতার শুভ মহরৎ, প্রায় প্রতি বিক্রয় প্রতিষ্ঠানেই ক্রেতাদের মিষ্টান্ন সহযোগে আপ্যায়ন করা হয়, সর্বএই এক মধুর প্রীতিপূর্ণ পরিবেশ। এই নববর্ষ সমগ্র মানুষের কাছে নবজীবনের দ্বার উম্নোচিএ করে দিক। আসুন পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে আমরা আমাদের মধ্যকার সকল বিভেদ ও দ্বিধা দূর করতে সচেষ্ট হই। আমরা জাগ্রত হই এখন্ড জাতীয় চেতনায়, নতুন বছর আমাদের সবার জীবনে সুখ সম্ভার বয়ে আনুক এটাই হউক আমাদের প্রত্যাশা। সবাইকে নববর্ষের. শুভেচ্ছা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন