হাফিজুল ইসলাম লস্কর :: সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নে ৩ হাজার হেক্টর কৃষি জমি ৪দিন ধরে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তলিয়ে গেছে কৃষকের উঠতি ফসলী জমি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান প্রায় কোটি টাকার মত। টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তলিয়ে যাওয়া উঠতি ফসলের মাঠ পরিদর্শন করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান।
জৈন্তাপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় উপজেলার প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির উঠতি ফসলি জমির ধান, তরমুজ, কুমড়া সহ নানা প্রজাতির ফসলের ব্যাপক চাষাবাদ হয়। কৃষি অফিসের তত্তাবধান ছাড়া কৃষকরা নিয়মিত ভাবে ফসলাদী ফলিয়ে আসছে। সম্প্রতি গত ২৯ মার্চ হতে আগাম বৃষ্টি এবং পাহাড়ী ঢলে এসকল ফসলী জমি পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে।
মার্চ মাসের শুরুর দিকে হঠাৎ বৃষ্টির ফলে কিছুটা ক্ষতি হলেও চলমান অতি বৃষ্টি এবং পাহাড়ী ঢলের কারনে উঠতি ফসলী জমি তলিয়ে যাচ্ছে। ফলে সাধারণ কৃষকরা সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ার আশংঙ্কা দেখা দিয়েছে উপজেলা জুড়ে।
সরেজমিনে হাওরের কৃষকদের সাথে আলাপচারিতায় তিনি জানান- কেন্দ্রি মৌজায় প্রায় ১শত একর জমিতে সেচ পদ্ধতীর মাধ্যমে রোরো আমন বি আর -২৮ সহ বিভিন্ন প্রজাতীর শাকসব্জি চাষাবাঁধ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে শাকসব্জি বৃষ্টির পানিতে পচন ধরে গেছে। সম্প্রতি পাহাড়ী ঢলে এবং অতি বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট বন্যায় ধানের চারা পানির মধ্যে তলিয়ে যায়। এতে সমুহ ফসলের ক্ষতির আশংঙ্কা কৃষকের মধ্যে বিরাজ করছে।
অপরদিকে জৈন্তাপুর ইউনিয়নের কৃষকেরা তাদের ক্ষতির সম্ভাবনার কথা জানান। এছাড়া নিজপাট ইউনিয়নের হর্ণি, বাইরাখেল, ফুলবাড়ী এলাকার কৃষক মনসুর আলম, পঙ্খী মিয়া, হোসেন আহমদ, ঘিলাতৈল গ্রামের পলাশ দাস, মনোরঞ্জন দাশ, নিখিল দাশ, খন্দকার আব্দুল মালেক, সুলেমান আহমদ, তলিয়ে যাওয়া জমির ফসলের কাছে বসে মাথায় হাত দিয়ে আর্তনাদ করতে দেখা যায়।
অন্যদিকে চারিকাটা ইউনিয়নের থুবাং, বালিদাঁড়া, সরুখেল দরবস্ত ইউনিয়েনের খলাগ্রাম, মহাইল, লামা মহাইল কাঞ্জর, সেনগ্রাম, মুটগুঞ্জা, গর্দনা, শুকইনপুর, ফতেহপুর ইউনিয়নের হেমু তিনপাড়া, দাউদপাড়া, বালিপাড়া, মাজরটুল, নয়াগ্রাম, হরিপুর, এবং চিকনাগুল ইউনিয়নের রামেশ্বর, কহাইগড়, ঘাটেরছটি এলকার নিম্নাঞ্চলের ফসলী জমি পাহাড়ী ঢলের নিচে তলিয়ে যাচ্ছে।
৩১মার্চ শুক্রবার উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সুহেল মাহমুদ, ভাইস চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন বৃষ্টিতে ভেজে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের কৃষকদের সাথে কথা বলেন এবং ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের সান্তনা দেন।
কৃষদের যে কোন পরিস্থিতিতে উপজেলা পরিষদের পক্ষ হতে সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাসদেন। কৃষকরা জৈন্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ফারুক হোসাইন কৃষকদের সাথে কোন প্রকার সহযোগিতা ও সাক্ষাত দিচ্ছেন না বলে ক্ষুব্ধতায় তারা ফেটে পড়েন।
এবিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জয়নাল আবেদীন বলেন- প্রকৃতির উপর কাহারো হাত নেই। আমরা কৃষকের কছে ছুটে গিয়ে তাদের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলছি। আগামী দিনের যে কোন ধরনের পরিস্থিতিতে সরকারের সহযোগিতা নিয়ে কৃষকের মাঝে আমরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিবেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন