শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৭

জৈন্তাপুরে বিদ্যুৎ সরবরাহে আসছে পল্লী বিদ্যুৎ , গ্রাহকদের মাঝে চরম অসন্তোষ

সালমান বিন বিলাল :: সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ১০ হাজারের অধিক বিদ্যুৎ গ্রাহকের প্রাণের স্পন্দন পিডিবি বিদ্যুৎ এখন পল্লী বিদ্যুতের নিকট হস্তান্তার করা হচ্ছে৷ ইতোমধ্যে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চুড়ান্ত হয়ে গেছে৷

জৈন্তাপুর উপজেলা বাসীকে আধারে রেখে পল্লী বিদ্যুতে রূপান্তরীত করা হচ্ছে৷ ফলে গ্রাহকের মাঝে বিরাজ করছে চরম অসন্তোষ।

ইতিমাধ্যে হস্তান্তর প্রক্রিয়া বন্ধ করা না হলে চরম বিদ্যুৎ ভোগান্তিতে পড়তে হবে গোটা উপজেলার ১০ হাজারের অধিক গ্রাহকদের৷

ইতোমধ্যে জৈন্তাপুর উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রিত এলাকা অাগফৌদ, বিড়াখাই, লামনীগ্রাম, বাউরভাগ কান্দি, মল্লীফৌদ, কাটাখাল, খারুবিল, অাসামপাড়া, অাদর্শগ্রাম, ঘিলারতৈর ও ফুলবাড়ী এলাকার পল্লী গ্রাহকরা সপ্তাহে ১০ ঘন্টা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছেন না৷ এর উপর যদি জৈন্তাপুর উপজেলার ১০ হাজারের অধিক সংখ্যাক গ্রাহকদের পল্লী বিদ্যুতের অাওতায় নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে দূর্ভোগের মাত্রা চরম আকার ধারন করবে৷

এদিকে ১৯৮৩ সালের প্রথম দিকে জৈন্তাপুর উপজেলায় ২শতাধিক পরিবার দিয়ে বাংলাদেশ বিদ্যুত বিতরন বিভাগ যাত্রা শুরু করে৷ বর্তমানে এই গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি হয়ে ১০ হাজারের অধিক ছড়িয়েছে৷

সম্প্রতি গ্রাহকের চাহিদা কথা বিবেচনা করে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইমরান অাহমদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নতুন সাব ষ্টেশন স্থাপন করা হয়৷ ফলে জৈন্তাপুর উপজেলার পিডিপির গ্রাহকরা বৃষ্টি ঝড় তুফানের মধ্যে নিরবিচ্ছিন বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে৷

অপরদিকে এই অঞ্চলে উল্লেখিত গ্রাম সমুহের গ্রাহকরা সপ্তাহের পর সপ্তাহ বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না৷

এদিকে জৈন্তাপুর অাবাসিক বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের মাধ্যমে সরকার প্রতি মাসে ১কোটি টাকার উপরে রাজস্ব রেভিনিউ পাচ্ছে৷ বিদ্যুৎ বিতরন বিভাগের মোট বিতরনের ১% শতাংশের নিচে বিল বকেয়া থাকে না৷ যাহা অন্য কোন জেলায় নেই৷ তারপরও জৈন্তাপুর হতে পিডিবির বিদ্যুৎ পল্লী বিদ্যুতের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে৷

শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৭

সিলেট জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন

হাফিজুল ইসলাম লস্কর :: আবুল কাহের চৌধুরী শামীমকে সভাপতি ও আলী আহমদকে সাধারণ সম্পাদক করে সিলেট জেলা বিএনপির ২৩১ সদস্য পূর্ণাঙ্গ কমিটি ২৬/০৪/২০১৭ বুধবার রাতে অনুমোদন করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি।

জেলা কমিটিতে স্থান পাওয়া অন্যান্য নেতারা হলেন:- সভাপতি- আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, সহ সভাপতি- আবদুল কাহির চৌধুরী, এডভোকেট আশিক উদ্দিন, এডভোকেট আবদুল গফ্ফার, আবদুল মান্নান, মহিউসসুন্নাহ নার্জিস, মঈনুল হক চৌধুরী, আশিক উদ্দিন, চৌধুরী, শেখ মো. মকন মিয়া, কামরুল হুদা জায়গীরদার,  মামুনুর রশিদ মামুন (চাকসু), শাহজামাল নূরুল হুদা, নাসিরুল হক শাহীন, সুফিয়ানুল করিম চৌধুরী, আবদুল মতিন (সাবেক চেয়ারম্যান), ইকবাল আহমদ, লুৎফুল হক খোকন (সাবেক চেয়ারম্যান), এডভোকেট কাওসার রসিদ বাহার, জিয়াউল বারী চৌধুরী শাহীন, শাহাব উদ্দিন, নূর মিয়া, ফখরুল ইসলাম ফারুক, এম এ মুছাব্বির (সাবেক চেয়ারম্যান), কামাল আহমদ, একে এম তারেক কালাম, মো. শাহাব উদ্দিন, আবদুল লতিফ, সোহেল আহমদ চৌধুরী, সৈয়দ মোতাহির আলী, জালাল উদ্দিন চেয়ারম্যান, উসমান গণি, আজির উদ্দিন চেয়ারম্যান, আবদুল হেকিম চৌধুরী, এনায়েত উল্লাহ, নাজমুল হোসেন পুতুল।

সাধারণ সম্পাদক : আলী আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক : মাহবুবুর রব চৌধুরী ফয়সাল, মামুনুর রশীদ মামুন চেয়ারম্যান, আসকির আলী, সৈয়দ সাফেক মাহবুব, জিলাল উদ্দিন চেয়ারম্যান, নাজিম উদ্দিন লস্কর, ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী,  মঈনুল হক।

সাংগঠনিক সম্পাদক- এমরান আহমেদ চৌধুরী, এডভোকেট হাসান পাঠোয়ারী রিপন, আবুল কাসেম, আবদুল আহাদ খান জামাল, শামীম আহমদ।

কোষাধ্যক্ষ- ডা. আরিফ আহমদ রিফা, দপ্তর সম্পাদক এডভোকেট ফখরুল হক, প্রচার সম্পাদক- নিজাম উদ্দিন জায়গীরদার, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মোখাদ্দস আলী,
প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক এড. আল আসলাম মুমিন।

আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. মুজিবুর রহমান, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সালেহা কবীর শেপী, যুব বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ওলিউর রহমান ডেনী, শাকিল মোর্শেদ, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মো. সুরমান আলী,

স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক লায়েছ আহমদ, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক সফিকুর রহমান, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এড. জুবায়ের আহমদ খান, প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আবু নাসের পিন্টু, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মশিকুর রহমান মহি, ইমরান রব্বানী।

ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আল মামুন খান, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক এড. কামরুজ্জামান সেলিম, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক এড. কামরুজ্জামান সেলিম, মতিউল বারী খোরশেদ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আ ফ ম কামাল, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক তছলিম আহমদ নিহার, পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক আবদুল হাফিজ,

শিশু বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান রুমেল, ত্রাণ ও পূণর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক এখলাছুর রহমান, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সাইদুর রহমান হিরু, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাহ আলম স্বপন, ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সাকুর, সমবায় বিষয়ক সম্পাদক লিলু মিয়া চেয়ারম্যান, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মানিক, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক জসিম উদ্দিন (জাসাস)।

শিল্প বিষয়ক মকবুল হোসেন, বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আবদুর রহমান রিপন, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক তাজ মো. ফখর উদ্দিন, যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক আরিফ ইকবাল নেহাল চেয়ারম্যান, মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক আলী আকবর, তাঁতী বিষয়ক সম্পাদক অহিদ তালুকদার।

সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বজলুর রহমান ফয়েজ, এড. এম এ তাহের, এড. এম এ তাহের, হাবিবুর রহমান হাবিব, মুরাদ হোসেন, সহ কোষাধ্যক্ষ এড. আহমদ রেজা, জাকির হোসেন,
সহ দপ্তর সম্পাদক এম এ মালেক, দিদার ইবনে লস্কর, বুরহান উদ্দিন।

সহ প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ছালিক আহমদ চৌধুরী, অধ্যাপক আজমল হোসেন রায়হান, সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন চেয়ারম্যান, মাওলানা সাইদুর রহমান, সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. ইসরাফিল আলী, এড. আমিন উদ্দিন, এড. তাজ উদ্দিন, সহ মহিলা বিষয়ক সম্পাদক তাহসিন শারমিন তামান্না।

সহ যুব বিষয়ক সম্পাদক আবদুল মালেক, সহ ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ফখরুল ইসলাম, সহ শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এম এ হান্নান, সহ স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সারওয়ার হোসেন, আমিনুল হক বেলাল, নারায়ণ পুরকায়স্থ ফনি, সহ পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হেলাল আহমেদ।

সহ প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এড. খালেদ জোবায়ের, সহ তথ্য বিষয়ক সম্পাদক শাহজাহান সেলিম বুলবুল, সহ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক শাহ মাহমুদ আলী, সহ বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সহ শিশু বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জয়, সহ পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক আইয়ূব আলী সজিব, সহ অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মামুনুর রশীদ মামুন চেয়ারম্যান, সহ প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আশফাক আহমদ চৌধুরী চেয়ারম্যান।

সহ ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আবদুল ওয়াহিদ সোহেল, ফারুক আহমদ, সহ সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আক্তার হোসেন, সহ ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক এনামুল হক মাক্কু, সহ সমবায় বিষয়ক সম্পাদক নূরুল ইসলাম, সহ মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম, সহ তাঁতী বিষয়ক সম্পাদক মো. শাহপরাণ, সহ গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ূন আহমদ, সহ মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ফয়সাল চেয়ারম্যান, সহ মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম।

সদস্য- এম.ইলিয়াস আলী, তাহসিনা রুশদীর লূনা, এনাম আহমদ চৌধুরী, দিলদার হোসেন সেলিম, শফি আহমদ চৌধুরী, এড. নূরুল হক, এড. শামসুজ্জামান জামান, কামরুল হাসান শাহীন, মাহবুবুল হক চৌধুরী, রুহেল আহমদ চেয়ারম্যান, ইসলাম উদ্দিন, মুহিবুল হক, নামর আলী, ইরিয়াস মিয়া, জিল্লুর রহমান শোয়েব, কবির হোসেন ধলা মিয়া, নজরুল হোসেন, হারুনুর রশীদ, শরীফুল হক, গোলাম কিবরিয়া,
মুজিবুর রহমান শওকত, মামুনুর রশিদ, ফয়সাল আহমদ চৌধুরী, গোলাম মোস্তফা খান, তাজুল ইসলাম, ইমরান রব্বানী, মাহবুবুর রহমান বাবু, গৌছ খান, সিদ্দিক আহমদ, নাজিম উদ্দিন, মুজিবুর রহমান, জাকারিয়া খান, নোমান উদ্দিন ইসলাম মুরাদ, আবদুল হাই, মনিরুজ্জামান চৌধূরী উজ্জ্বল, এইম এম খলিল চেয়ারম্যান, ময়নুল হক, হেলালুজ্জামান হেলাল, মাসুম আলম, অধ্যাপক মঈন উদ্দিন, সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, ফারুক আহমদ, ওয়াহিদুজ্জামান সুফী, গয়াছ মিয়া, আবদুর রশিদ, শাহ আলম চৌধুরী তোফায়েল চেয়ারম্যান, জসিম উদ্দিন, আবদুল ওয়াছেহ চৌধুরী জুবের, মোয়াজ্জেম হোসেন সাহেদ, সালেহ আহমদ গেদা, চৌধুরী মোহাম্মদ সোহেল, আলী আহসান, মুহিবুর রহমান, সালিক আহমদ, শাহ মোহাম্মদ এহিয়া, হাফিজুর রহমান, আতাউর রহমান, হাজী খলিক আহমদ, গিয়াস উদ্দিন মেম্বার, নজরুল খান, বশির আহমদ, মনিরুল ইসলাম তুরণ, আবদুল্লাহ আল মামুন সামুন, মোতাহির হোসেন জুনেদ, নুরুল হোসেন বুলবুল, হাসান আহমদ, আক্তার হোসেন জাহেদ, হাসান ইমাদ, আবদুর রশিদ চেয়ারম্যান, বাহারুল আলম চেয়ারম্যান, আবদুল মতিন, আহমদ নুরু উদ্দিন, বদরুল ইসলাম জয়দু, সৈয়দ হাসান মাহমুদ বাবু, আবদুল মান্নান, আবদুল ওয়াহিদ, জিয়াউল হক, আজির উদ্দিন, আবদুস সবুর, হুমায়ূন কাদির রিপন, ফয়জুর রহমান ফয়েজ, আবদুল হান্নান, মুজিবুর রহমান মিন্টু, দেলোয়ার হোসেন মানিক, কায়েস আহমদ, আবদুল মালিক সাকু, জাহেদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, কামাল উদ্দিন, সেলিম আহমদ, রাহাত চৌধুরী মুন্না, আবদুল্লাহ আল মামুন, এটিএম বেলায়েত হোসেন, জসিম উদ্দিন, খালেক আহমদ চেয়ারম্যান, আবুল খায়ের, মঈন উদ্দিন মেম্বার, আজির উদ্দিন মেম্বার, রাজ উদ্দিন খন্দকার, সাহেদুল ইসলাম বাচ্চু, আব্বাস উদ্দিন চেয়ারম্যান, গিয়াস আহমদ তালুকদার চেয়ারম্যান, মাহবুব আহমদ চেয়ারম্যান, মিনহাজ উদ্দিন চৌধুরী, বাবুল মিয়া, ওয়াছির আলী, জৈন উদ্দিন, জিলা মিয়া মেম্বার, নাজমুল ইসলাম নজম, নছির মিয়া, এবিএম জাকারিয়া, নজির উদ্দিন, ফরিদ উদ্দিন, মো. আলমগীর হোসেন, এমএ রহিম, এড. নূর আহমদ, শামীম আহমদ, লুৎফুর রহমান, শায়েস্তা আহমদ, মাসুম আহমদ, রিপন আহমদ কাউন্সিলর, সাঈদ আহমদ, নাজমুল ইসলাম, ফরিদ আহমদ, আমিনুর রহমান শিফতা, আত্তর আলী, নাজিম উদ্দিন, এমরান গাজী, আবদুল মুনিম, ময়নুল ইসলাম মঞ্জু, শাহীন আহমদ, শামসুর রহমান শামীম, শাহীন আহমদ, আবদুস শুকুর, আশরাফ বাহার, মন্তাজ আলী, এড. মেহেরুন্নেসা মিলা, আলা উদ্দিন সওদাগর, নূরুল ইসলাম বাচ্চু, জসিম উদ্দিন জুনেদ, শাহনাজ বেগম মান্না, মাসুক আহমদ, মাওলানা জিল্লুর রহমান, খালেদুজ্জামান খালেদ, দেওয়ান নিজাম খান, আখতার হোসেন উস্তার, আবদুল মান্নান, মো. রফিকুল হক, আবদুর রহমান, সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, আবদুল মজিদ, কামরুজ্জামান দিপু।

বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৭

ভাসমান বেঁদে পরিবারের মাঝে পুলিশ সুপারের খাদ্য দ্রব্য বিতরণ

সালমান বিন বিলাল, জৈন্তাপুর থেকে :: সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার সারী ব্রীজের পাশে বেশ কয়েক বছর থেকে অস্তায়ীভাবে বসবাস করছেন প্রায় ৩০ টির ও বেশি বেদে পরিবার । ২৭/০৪/২০১৭ বৃহস্পতিবার বিকালে ২৮ টি ভাসমান বেঁদে পরিবারের মধ্যে সিলেট জেলা পুলিশ সুপার খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।

২৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের সারীঘাট সরুফৌদ এবং সারী ব্রীজের নিচে ভাসমান অবস্থায় বাসবাস করে আসা ২৮ টি বেঁদে পরিবারের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন সিলেট জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মনিরুজ্জামান।

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে জৈন্তাপুর উপজেলায় ভাসমান অবস্থায় বাসবাস করে আসা বেঁদে সম্প্রদায়ের লোকজনেরা কর্মহীন হয়ে অর্ধাহারে অনাহানে দিন যাপন করছে। তাদের অসহায়ত্তের কথা বিবেচনা করে সিলেট জেলা পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান খাদ্য সামগ্রী নিয়ে ছুটে আসেন তাদের পরিবারে এসময় তার উপস্থিতি দেখে বেঁদে পরিবারগুলোতে নেমে আসে আনন্দ।

খাদ্য সামগ্রী বিতরন কালে উপস্থিত ছিলেন এডিশনাল পুলিশ সুপার আবুল হাসানাত, এডিশনাল পুলিশ সুপার ড. আখতারুজ্জামান বসুনিয়া, এএসপি জৈন্তাপুর সার্কেল আমিনুর রহমান, এএসপি গোয়াইনঘাট সার্কেল মতিয়ার রহমান, জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সফিউল কবির, গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেন,

জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ(তদন্ত) মোঃ জাহিদ আনোয়ার, টিএসআই দেলোয়ার হোসেন, নিজপাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর এলাহী সম্রাট সহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুল সংখ্যাক সদস্য এছাড়া উপস্থিত ছিলেন জনপ্রতিনিধি সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

এ বিষয়ে বেঁদে সরদার ইমান আলী ও স্বর্পরাজ জুয়েল মিয়া বলেন- আমাদের কথা কেউ বিবেচনা করে না কিন্তু পুলিশ সুপার শত কিছুর পর আমাদের অসহায়ত্বের কথা বিবেচনা করে আমাদেরকে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে ছুটে আসে আমাদের পরিবারের লোকজনের মধ্যে আনন্দ বয়ে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। আমরা তার এ উপকার সারা জীবন স্মারণ রাখব।

ফেঞ্চুগঞ্জ কুশিয়ারা সেতুটি ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষী

হাফিজুল ইসলাম লস্কর :: সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ার নদীর উপর দিয়ে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ফেঞ্চুগঞ্জ কুশিয়ারা রেলসেতুটি আজও স্বমহিমায় মজবুত অবকাঠামো ও শক্ত বিত্তি নিয়ে কুশিয়ারার প্রবল স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে আছে।

ঐতিহাসিক এ রেল সেতুর মাধ্যমেই সারা বাংলাদেশের সাথে সিলেটের রেল যোগাযোগ নিরবিচ্ছিন্ন হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ১৯৭১ সালে এ রেল সেতুর দক্ষিন থেকে মুক্তিবাহিনী যুদ্ধ করে ইলাশপুর সেতুর পাশে থাকা পাকবাহিনীর সাথে। মুক্তিবাহিনীর শেলের আঘাতে ইলাশপুর সেতুতে থাকা রেলের বগি ঢালা নদীতে ধ্বংস হয়। যা আজও ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে।

দেশী বিদেশী পর্যটক ও ঐতিহাসিকবীদগন এ দুই সেতু দেখে নিজের জানার ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে তুলেন । কেউ কেউ আবার অদম্য সাহসী হয়ে সেতুতে গিয়ে ছবি ও সেলফি তুলে নিজের আত্মতৃপ্তি ও জানাকে স্মৃতিময় করে তুলেন এবং বন্ধুদের সাথে ছবি শেয়ার করেন।

এছাড়াও ভ্রমনপ্রিয় ফুর্তিবাজ যুবকেরা বিকাল বেলা সেতুর পাশে বসে সেল্ফি, আড্ডা, খোলা গলায় গান। আগেকার লোকজন রেল সেতু দিয়েই হেটে বাজারে আসতেন, তবে কয়েকটি দুর্ঘটনায় মানুষ সচেতন হয়ে এখন খেয়া নৌকা দিয়েই পারাপার করেন।

এ সেতুর নিচে ও চতুর্দিকে বড় বড় পাথরের প্রতিরক্ষা দেওয়া। তাই এখানে প্রচুর মাছ মিলে। জেলেরা দিন রাত এখানে মাছ ধরেন। সম্প্রতি এ সেতুতে সংস্কার ও নতুন রঙ করার ফলে সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাওয়ায় পর্যটক ও সাধারন দর্শকের হ্রদয় আকৃষ্ট হয়েছে।

বুধবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৭

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ প্রায় ৫০ হাজার পরিবার পাচ্ছে ভিজিএফ কার্ড

হাফিজুল ইসলাম লস্কর :: সিলেটে বিভাগে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ প্রায় ৫০ হাজার পরিবারকে সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে।

ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ এসব পরিবারকে মাসে ৩০ কেজি চাল ও নগদ ৫০০ টাকা করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার।

২৬/০৪/২০১৭ বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসন মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার।

সংবাদ সম্মেলনে রাহাত আনোয়ার জানান, সিলেট জেলার ১৩টি উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন প্রায় ২ লাখ পরিবারের ১০ লাখ মানুষ। ফসলহানী হয়েছে ৬৪ হাজার ৪৫৪ হেক্টর জমির।

ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর মধ্যে ৪৭ হাজার ২৫০ কৃষক ও ২ হাজার ৭৫০ মৎস্যজীবী পরিবার ভিজিএফ কার্ডার মাধ্যমে এ সহযোগিতা পাবেন। ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় এ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে একশ দিনের জন্য।

জেলা প্রশাসক আরও জানান, উপজেলা পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে দু’একদিনের মধ্যে তালিকা আসার কথা রয়েছে।

তালিকা আসলেই ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে চাল ও আর্থিক সহায়তা প্রদান কার্যক্রম আরম্ভ হবে। ৫০ হাজার পরিবারের মধ্যে মোট ৪ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ সাড়ে ৭ কোটি টাকা বিতরণ করা হবে।

জেলা প্রশাসক বলেন আমি জানি ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত এই ভিজিএফ কার্ড তথা সাহায্য পর্যাপ্ত নয়, তাই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ে আরো ভিজিএফ কার্ড বরাদ্দের আবেদন জানাবো।

জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার বলেন, আমরা বন্যার শুরুতেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা ত্রাণ তহবিল থেকে ৩২০ মেট্রিক টন চাল ও ২০ লাখ ৮০ হাজার টাকা বিতরণ করেছি।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শহীদুল ইসলাম চৌধুরীসহ জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

কৃষকদের হাহাকার-আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে হাওরের আকাশ-বাতাস

হাফিজুল ইসলাম লস্কর :: বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অফুরন্ত সম্ভাবনাময় অথচ বিপন্ন এক জনপদের নাম ‘হাওর’। নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্তত ৪০টি উপজেলা নিয়ে গঠিত এ ভূ-ভাগ ‘শস্য ও মৎস্যভান্ডার নামে পরিচিত। ষড়ঋতুর দেশ হলেও হাওর এলাকার ঋতুবৈচিত্র্য কিছুটা ব্যতিক্রম। হাওড়বাসীর কাছে ঋতু মাত্র দুটি। একটি বর্ষা, অন্যটি হেমন্ত। বর্ষার ছয়-সাত মাস অথৈ জলরাশির সঙ্গে সংগ্রাম করতে হয় হাওরের অধিবাসীদের। আর হেমন্তের পাঁচ-ছয় মাস তারা ব্যস্ত থাকেন কৃষি কাজ নিয়ে। এখানকার কৃষি মানেই বোরো ফসল।
দেশের এক-পঞ্চমাংশ ধান উৎপাদিত হয় হাওরাঞ্চলে। একমাত্র বোরো ফসলের ওপর নির্ভর করেই সারা বছর বেঁচে থাকে হাওরের মানুষজন। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ বোরো চাষীদের সেই সোনালি স্বপ্নকে প্রায় প্রতিবছরই চুরমার করে দেয়। আর ফসল মার গেলে কৃষকদের হাহাকার-আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে হাওরের আকাশ-বাতাস। বদলে যায় হাওরের অর্থনৈতিক চালচিত্র। হাওরের ‘দুর্গম গিরি-কান্তার মরু’ ভেদ করে শহরাঞ্চলের ব্যস্ত ‘নাগরিক কানে’ এর অনেক খবরই ঠিকমতো পৌঁছে না। যুগ যুগ ধরে এটাই হাওরবাসীর করুণ নিয়তি।
এবারও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর টানা বৃষ্টির পানিতে নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ এবং অন্যান্য হাওরবেষ্টিত জেলার হাজার হাজার হেক্টর বোরো জমি আগাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কি-না জানি না, হাওরে এবার বন্যা হয়েছে অন্যান্যবারের তুলনায় অনেক আগেভাগে। মার্চের শেষ সপ্তাহে যখন প্রচ- খরতাপ বয়ে যাবার কথা, ঠিক তখনই উজান থেকে আসতে শুরু করে পাহাড়ি ঢল। সঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টি। এ কারণে এপ্রিলের দু-তিন তারিখের মধ্যেই তলিয়ে যায় অসংখ্য ফসলি হাওর। অন্যান্য বছর আগাম বন্যার সময় কাঁচা ধান কেটে কিছু ‘খোরাকি’ বা গো-খাদ্য সংগ্রহের যে চেষ্টা চলত, এবার তাও পারেননি কৃষকরা।
কারণ, সবেমাত্র জমিতে ধানের ফুল বেরোচ্ছিল (কৃষিবিদরা যাকে বলেন ফ্লাওয়ারিং স্টেজ)। অর্থাৎ গোটা হাওরাঞ্চলে যখন হাতছানি দিচ্ছিল সবুজের সমারোহ, বাতাসে দোল খাচ্ছিল কচি ধানের শীষ, ঠিক তখনই ধেয়ে আসে সর্বনাশা ঢল।
এদিকে ফসল রক্ষায় প্রকৃতির সঙ্গে সংগ্রামও কম করেননি হাওরের মানুষ। ঢলের পানি দেখেই সংঘবদ্ধ হয়েছেন তারা। যার জমি নেই তিনিও ছুটে গেছেন হাওরে। সারাদিন, এমনকি রাতেও হ্যাজাক লাইট বা জেনারেটরের আলোতে স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি কেটেছেন হাজার হাজার মানুষ। উদ্দেশ্য হাওর রক্ষা বাঁধ উঁচু করা। নদ-নদীতে পানি যত বেড়েছে, বাঁধও তত উঁচু করার চেষ্টা চলেছে। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে শেষ রক্ষার অভিযান। ধনু, কংশ, সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, ঘোরাউৎরা, মগড়া, দাইরা, খৈসর, কালনিসহ বিভিন্ন নদী দিয়ে বয়ে আসা মেঘালয়ের পানির স্রোত নিমিষেই ভেঙ্গে দিয়েছে অসংখ্য বাঁধ। আবার কোন কোনটি সম্পূর্ণ তলিয়েও গেছে। এভাবেই পাহাড়ি ঢল ভেঙ্গে দিয়ে গেছে হাওরবাসীর স্বপ্ন। পত্র-পত্রিকা ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় খুব স্বল্প পরিসরেই উঠে আসছে হাওরের ফসল ডুবি বা কৃষকের সর্বনাশের খবর।
বলাবাহুল্য, হাওরাঞ্চলের আশিভাগ মানুষই একমাত্র বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। তাদের সারা বছরের খাদ্য, সন্তানের লেখাপড়া, ঘরে থাকা প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে বা আইবুড়ো মেয়ের বিয়ে, হাড়ভাঙা খাটুনির কারণে জীর্ণ শরীরের চিকিৎসা, বন্যার কবল থেকে রক্ষার জন্য বসতবাড়ির ভিটেমাটি উঁচু করাসহ সবই নির্ভর করে একমাত্র বোরো ফসলের ওপর। তাই ফলন ভাল হলে কৃষক পরিবারগুলোতে আনন্দের সীমা থাকে না। কিন্তু এবার তাদের সব স্বপ্ন-আকাঙ্খা ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। বিকল্প আয়ের সুযোগ না থাকায় এখানকার কৃষকদের জমি চাষাবাদ করতে হয় ঋণের ওপর নির্ভর করে। ব্যাংক, এনজিও এবং মহাজন এই তিন উৎস থেকেই পুঁজি সংগ্রহ করেন তারা। ধান ঘরে তোলার পর তা বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করেন। কিন্তু ফসলডুবির কারণে এবার তাদের ঋণ পরিশোধের ক্ষমতাও শেষ হয়ে গেছে। ধনী-গরিব সব যেন একাকার হয়ে গেছে। মাথার ওপর ঋণের বোঝা, সহায়-সম্বল হারানো ব্যথা, আর শূন্য পকেটে সারা বছরের খাদ্য যোগাড় এবং সন্তানের পড়ালেখা চালানোর দুশ্চিন্তায় এখন প্রতিটি পরিবারে চলছে কান্না-আহাজারি। কাছে থেকে না দেখলে তা বিশ্বাস করা সত্যি কঠিন হবে অনেকের কাছে।
কিন্তু হাওরবাসীর এই করুণ পরিণতির কি কোন প্রতিকার নেই? হাওর উন্নয়ন বোর্ড, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ স্থানীয় পর্যায়ে কর্মরত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কি কোন দায়ই নেই? নির্বাচন এলেই হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন জনপ্রতিনিধিরা। প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা বরাদ্দও হয় বাঁধ নির্মাণের জন্য। কিন্তু বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থ কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তনে তেমন কোন কাজেই আসে না। বরাবরই এ নিয়ে চলে শুভঙ্করের ফাঁকি। হয় ব্যাপক লুটপাট ও অনিয়ম-দুর্নীতি। খোঁজ নিয়ে এর অনেক কারণও জানা গেছে। কিছু বিষয় খবরেও এসেছে। হাওরের বাঁধগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো)। কিন্তু প্রায় বছরই পাউবো উপযুক্ত সময়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করে না। তারা ঠিকাদারদের যে সময়সীমা বেঁধে দেয় তাতেই সূত্রপাত ঘটে পুকুরচুরির। প্রায় সময়ই লক্ষ করা যায়, হাওরে পানি আসতে শুরু করলেও বাঁধগুলোতে মাটি কাটার কাজ শেষ হয় না। ফলে কৃষকদেরই বাঁধ রক্ষায় নামতে হয়। আর এমনটি করলে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ঠিকাদার দু’পক্ষেরই পেট ভরে। বাঁধ পানির নিচে রেখে শতভাগ কাজ দেখিয়ে বিল তুলে নেয়া যায়। আবার যে দল যখন ক্ষমতায় থাকে তখন সে দলের কর্মীরাই বাঁধ মেরামতের ঠিকাদারি পায়। অভিযোগ, ঠিকাদাররা বাঁধ মেরামতের কাজে কৃষকদের সঙ্গে কোনরূপ সমন্বয় করেন না।
তবে এটিও সত্য যে, বছর বছর মাটির বাঁধ দিয়ে হাওরের ফসল রক্ষা করা যাবে না। পাহাড়ী ঢল আসবেই। তাই স্থায়ী সমাধান হিসেবে মাটির বদলে ইট-কংক্রিটের শক্ত বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। পাশাপাশি ঢলের পানি ধারণ করে রাখারও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করতে হবে। হাওরাঞ্চলের উপর দিয়ে প্রবহমান নদ-নদীগুলোর বেশিরভাগই আজ প্রায় নিশ্চিহ্ন। একই অবস্থা প্রায় ৬ হাজার ৩শ’টি বিল এবং অসংখ্য খাল, নালা ও ডোবারও। কোন কোনটির এখন আর অস্তিত্বই নেই। অথচ এক সময় প্রাকৃতিক জলাধারের পানি দিয়েই হাওরের সেচ চলত। সারাবছর চলত নৌ-যোগাযোগ। বলাবাহুল্য, এখন মাঘ-ফালগুনেই সেগুলো পানিশূন্য হয়ে পড়ে। আবার তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় সামান্য পাহাড়ি ঢলেই উপচে গিয়ে সৃষ্টি করে অকাল বন্যার। তাই প্রকৃতির এই জলাধারগুলো মুক্ত করে পানি ধারণ করে রাখার উপযোগী করতে হবে। নদীগুলোর গতিপথ ঠিক করে খনন করতে হবে। নদী খনন করলে খনন করা মাটি দিয়ে পাড়গুলোও উঁচু করা যাবে। এতে পাড়ের বাঁধ যেমন উঁচু হবে তেমনি নদীর পানি ধারণক্ষমতাও বাড়বে। তবে নদীর পাড় এবং বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণেরও বছরব্যাপী উদ্যোগ থাকতে হবে। শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই ‘কাজের বিনিময়ে খাদ্য’ বা ‘ক্যাশ ফর ওয়ার্ক’ ধরনের কর্মসূচি চালু করে বাঁধগুলো উঁচু ও মেরামত করলে একদিকে যেমন বাঁধ রক্ষা হবে তেমনি দরিদ্র, দিনমজুর-কৃষকদের কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়বে। কোন কোন এলাকায় বাঁধ-কাম-রাস্তা নির্মাণ করে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায়ও পরিবর্তন আনা সম্ভব। এছাড়া বাঁধের পাশে হিজল, করচ, বিন্না, ইকর প্রভৃতি পানিবান্ধব গাছ রোপণ করেও ভাঙন রোধ করা যেতে পারে। হাওরের পানি প্রবাহ ঠিক রাখতে পরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করতে হবে সুইস গেট ও রেগুলেটর। হাওর উন্নয়ন বোর্ড বা পানি উন্নয়ন বোর্ড যারাই এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে তাদের কর্মপরিকল্পনার সঙ্গে স্থানীয় কৃষকদেরও সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে হবে। এদিকে হাওরের কৃষক পরিবারগুলোতে এখন যে হাহাকার চলছে তা মোকাবেলায় হাওরাঞ্চলকে দ্রুত ‘দুর্গত এলাকা’ ঘোষণা করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জরুরি পুনর্বাসন করতে হবে। পূর্ববর্তী সব ধরনের ঋণ মওকুফসহ নতুন করে ঋণ ও খাদ্য সহায়তা দিতে হবে। আগামী ফসলের জন্য বরাদ্দ করতে হবে বিনামূল্যে সার, বীজ ও কীটনাশক। এছাড়া শতভাগ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তির আওতায় আনতে হবে, যাতে অভাব-অনটনের কারণে কেউ ঝরে না পড়ে। এসব না করলে হাওরের হাহাকার এবার সহজে থামবে না।