বৃহস্পতিবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৮

যে পাতা খেলে ১০টি রোগের উপশম হয়!

লস্কর বার্তা :: থানকুনি পাতা। আমাদের দেশের খুব পরিচিত একটি ভেষজ গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ। এর ল্যাটিন নাম centella aciatica। গ্রামাঞ্চলে থানকুনি পাতার ব্যবহার আদি আমল থেকেই চলে আসছে। ছোট্ট প্রায় গোলাকৃতি পাতার মধ্যে রয়েছে ওষুধি সব গুণ। থানকুনি পাতার রস রোগ নিরাময়ে অতুলনীয়। প্রক্রিয়াজাত করণের মাধ্যমে বহু রোগের উপশম হয় এর ভেষজ গুণ থেকে। খাদ্য উপায়ে এর সরাসরি গ্রহণ রোগ নিরাময়ে থানকুনি যথার্থ ভূমিকা রাখতে সক্ষম।

অঞ্চলভেদে থানকুনি পাতাকে আদামনি, তিতুরা, টেয়া, মানকি, থানকুনি, আদাগুনগুনি, ঢোলামানি, থুলকুড়ি, মানামানি, ধূলাবেগুন, নামে ডাকা হয়। তবে বর্তমানে থানকুনি বললে সবাই চেনে।

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে কেউ যদি নিয়মিত থানকুনি পাতা খাওয়া শুরু করে, তাহলে মাথার চুল থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত শরীরের প্রতিটি অংশের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে মেলে আরও অনেক উপকার। যেমন ধরুন...

১. চুল পড়ার হার কমে:
নানা সময়ে হওয়া বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে সপ্তাহে ২-৩ বার থানকুনি পাতা খেলে স্কাল্পের ভেতরে পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়। ফলে চুল পড়ার মাত্রা কমতে শুরু করে। চুল পড়ার হার কমাতে আরেকভাবেও থানকুনি পাতাকে কাজে লাগাতে পারেন। কীভাবে? পরিমাণ মতো থানকুনি পাতা নিয়ে তা থেঁতো করে নিতে হবে। তারপর তার সঙ্গে পরিমাণ মতো তুলসি পাতা এবং আমলা মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। সবশেষে পেস্টটা চুলে লাগিয়ে নিয়ে কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। ১০ মিনিট পরে ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হবে চুলটা। প্রসঙ্গত, সপ্তাহে কম করে ২ বার এইভাবে চুলের পরিচর্যা করলেই দেখবেন কেল্লা ফতে!

২. টক্সিক উপাদানেরা শরীর থেকে বেরিয়ে যায়:
নানাভাবে সারা দিন ধরে একাধিক ক্ষতিকর টক্সিন আমাদের শরীরে, রক্তে প্রবেশ করে। এইসব বিষেদের যদি সময় থাকতে থাকতে শরীর থেকে বের করে দেওয়া না যায়, তাহলে কিন্তু বেজায় বিপদ! আর এই কাজটি করে থাকে থানকুনি পাতা। কীভাবে করে? এক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে অল্প পরিমাণ থানকুনি পাতার রসের সঙ্গে ১ চামচ মধু মিশিয়ে খেলে রক্তে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদানগুলি বেরিয়ে যায়। ফলে একাধিক রোগ দূরে থাকতে বাধ্য হয়।

৩. ক্ষতের চিকিৎসা করে:
থানকুনি পাতা শরীরে উপস্থিত স্পেয়োনিনস এবং অন্যান্য উপকারি উপাদান এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো এবার থেকে কোথাও কেটে গেলে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে অল্প করে থানকুনি পাতা বেঁটে লাগিয়ে দেবেন। দেখবেন নিমেষে কষ্ট কমে যাবে।

৪. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে:
থানকুনি পাতা হজম ক্ষমতারও উন্নতি হবে। কারণ একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে থানকুনি পাতায় উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান হজমে সহায়ক অ্যাসিডের ক্ষরণ যাতে টিক মতো হয় সেদিকে খেয়াল রাখে। ফলে বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে না।

৫. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়:
থানকুনি পাতায় উপস্থিত অ্যামাইনো অ্যাসিড, বিটা ক্যারোটিন, ফ্য়াটি অ্যাসিড এবং ফাইটোকেমিকাল ত্বকের অন্দরে পুষ্টির ঘাটতি দূর করার পাশাপাশি বলিরেখা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্কিনের ঔজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে কম বয়সে ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও কমে।

৬. আমাশয়ের মতো সমস্যা দূর হয়:
এক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নিয়ম করে থানকুনি পাতা খেতে হবে। এমনটা টানা ৭ দিন যদি করতে পারেন, তাহলেই কেল্লাফতে! এই ধরনের সমস্যা কমাতে আরেকভাবেও থানকুনি পাতাকে কাজে লাগাতে পারেন। প্রথমে পরিমাণ মতো থানকুনি পাতা বেটে নিন। তারপর সেই রসের সঙ্গে অল্প করে চিনি মেশান। এই মিশ্রনটি দু চামচ করে, দিনে দুবার খেলেই দেখবেন কষ্ট কমে যাবে।

৭. পেটের রোগের চিকিৎসায় কাজে আসে:
অল্প পরিমাণ আম গাছের ছালের সঙ্গে ১ টা আনারসের পাতা, হলুদের রস এবং পরিমাণ মতো থানকুনি পাতা ভাল করে মিশিয়ে ভাল করে বেটে নিন। এই মিশ্রনটি নিয়মিত খেলে অল্প দিনেই যে কোনও ধরনের পেটের অসুখ সেরে যায়। সেই সঙ্গে ক্রিমির প্রকোপও কমে।

৮. কাশির প্রকোপ কমে:
২ চামচ থানকুনি পাতার রসের সঙ্গে অল্প করে চিনি মিশিয়ে খেলে সঙ্গে সঙ্গে কাশি কমে যায়। আর যদি এক সপ্তাহ খেতে পারেন, তাহলে তো কথাই নেই। সেক্ষেত্রে কাশির কোনও চিহ্নই থাকবে না।

৯. জ্বরের প্রকোপ কমে:
সিজন চেঞ্জের সময় যারা প্রায়শই জ্বরের ধাক্কায় কাবু হয়ে পারেন, তাদের তো থানকুনি পাতা খাওয়া মাস্ট! কারণ আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে যে জ্বরের সময় ১ চামচ থানকুনি এবং ১ চামচ শিউলি পাতার রস মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে অল্প সময়েই জ্বর সেরা যায়। সেই সঙ্গে শারীরিক দুর্বলতাও কমে।

১০. গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়:
অসময়ে খাওয়ার কারণে ফেঁসেছেন গ্যাস্ট্রিকের জালে? নো প্রবেলম! থানকুনি পাতা কিনে আনুন বাজার থেকে। তাহলেই দেখবেন সমস্যা একেবারে হাতের মধ্যে চলে আসবে। আসলে এক্ষেত্রে একটা ঘরোয়া চিকিৎসা দারুন কাজে আসে। কী সেই চিকিৎসা? হাফ লিটার দুধে ২৫০ গ্রাম মিশ্রি এবং অল্প পরিমাণে থানকুনি পাতার রস মিশিয়ে একটা মিশ্রন তৈরি করে ফেলুন। তারপর সেই মিশ্রন থেকে অল্প অল্প করে নিয়ে প্রতিদিন সকালে খাওয়া শুরু করুন। এমনটা এক সপ্তাহ করলেই দেখবেন উপকার মিলবে।

শুক্রবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৮

সিলেট বিএনপিতে সাধারন সম্পাদক নিয়ে ধূম্রজাল অব্যাহত

হাফিজুল ইসলাম লস্কর :: সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক কে? তা নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন জানান, সেলিম বর্তমানে দলীয় পদে বহাল রয়েছেন। তিনি চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে অবস্থান করায় তার অবর্তমানে আজমল বখত সাদেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তবে সিলেট বিএনপির অনেক নেতাকর্মী মনে করেন, পদ বহালের লিখিত কোন পত্র না পাওয়ায় সেলিম এখনো দলের পদ ফিরে পাননি। অন্যদিকে সিলেট মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত সাদেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় এ ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।

কিন্তু পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে উপলক্ষে সাধারণ সম্পাদক পদ ব্যবহার করে যুক্তরাজ্য থেকে সিলেটবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টারিং করেছেন বদরুজ্জামান সেলিম। অন্য দিকে আজমল বখত সাদেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সিলেটবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সিলেট বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে ধূম্রজাল ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

এ সম্পর্কে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন জানান, সেলিম এবং সাদেক দুজনেরই পদ ব্যবহারের বিষয়টি সঠিক। সেলিমই সাধারন সম্পাদক। তিনি চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে অবস্থান করায় তার অবর্তমানে আজমল বখত সাদেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তবে সিলেট বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী বল্রন, পদ বহালের লিখিত কোন পত্র না পাওয়ায় সেলিম এখন আর সিলেট বিএনপির সাধারন সম্পাদক নন। তাছাড়া সিলেট মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত সাদেক লিখিতভাবে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। যা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়েছে।

এ ধূম্রজাল সৃষ্টি হয় সিসিক নির্বাচনে প্রার্থীতাকে কেন্দ্র করে। সিসিক নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা, বাস প্রতীক নিয়ে প্রচারণা আর বিভিন্ন অলোচিত বক্তব্যের কারনে  তিনি নির্বাচনের অন্যতম আলোচিত প্রার্থী ছিলেন।

তার প্রার্থীতা নিয়ে বিএনপির রাজনীতিতে অনেক জল ঘোলা হয়েছিল। ১০ জুলাই ‘দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দলের স্বার্থবিরোধী কর্মকান্ড লিপ্ত থাকার’ অভিযোগে সেলিমকে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের পদ ও বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তারপরও তিনি নির্বাচনে অনড় ছিলেন। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারনার শেষ পর্যায়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের অনুরুধ ও মায়ের আদেশে দলীয় প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীকে সমর্থন জানান। ১৯ জুলাই কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের উপস্থিতিতে আরিফের বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন সেলিম।

এ সংবাদ সম্মেলনের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আমান উল্লাহ আমান জানান, দলের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রার্থী হওয়ায় বদরুজ্জামান সেলিমকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদেই থাকছেন।

মঙ্গলবার, ২১ আগস্ট, ২০১৮

শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে সিলেট জেলার কোরবানির পশুর হাটগুলো

হাফিজুল ইসলাম লস্কর :: পবিত্র ঈদুল আযহা কে সামনে রেখে সিলেট জেলার কোরবানির পশুর হাটগুলো শেষ মুহুর্তে  জমে উঠেছে। সিলেটের মাছিম পুর গরুর বাজার, কদমতলি, কাজির বাজার, টিলাগড়, সুবিদ বাজার, শিবগঞ্জ বাজার, শাহপরান, হেমু, গোলাপগঞ্জ এমসি একাডেমী মাঠ, ঢাকাদক্ষিণ বাজার, পুরকায়স্থ বাজার, জকিগঞ্জ, কালীগঞ্জ, সোনাসার, বিয়ানীবাজার, চারখাই বাজার, কানাইঘাটের, ফেঞ্চুগঞ্জসহ বেশ জেলার কোরবানির পশুর হাট জমজমাট হয়ে উঠেছে।

সরজমিন জেলার প্রধান প্রধান কয়েকটি কোরবানির পশুর হাট ঘুরে দেখা যায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে কোরবানির আমেজ বিদ্যমান। ক্রেতা ও বিক্রেতারা উৎফুল্ল মেজাজে দর কষাকষির মাধ্যমে গবাদি পশু ক্রয়-বিক্রয় করছেন।

স্থানীয় বাজার সমূহে কোরবানির পশুর মধ্যে গরুর পাশাপাশি ছাগলের হাটেও ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যায়। ক্রেতারা যে যার সাধ্যমত গরু ক্রয় করতে বাজারের শুরু থেকে শেষ প্রান্ত পর্যন্ত ঘুরে দরাদরির করছেন। বিক্রেতারাও নিজের গৃহপালিত গবাদি পশুটিকে ক্রেতার সম্মুখে আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন রকম সাজে সজ্জিত করে রেখেছেন।

তবে এবার কোরবানির পশুর দাম নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য পাওয়া যায়। মাছিমপুর বাজারে গরু নিয়ে আসা কামার আহমদ জানান, চাহিদা মতো দাম পাচ্ছি না। অভিযোগের সুরে বলেন মৌসুমী ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য গৃহস্থ্যরা তাদের দেশীয় গরুর প্রাপ্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

আরও কয়েকজন বিক্রেতার সাথে আলাপ করে জানা যায়, এবারকার কোরবানির ঈদে বড় গরুর চেয়ে মধ্যম সাইজের ৩৫,০০০ হাজার থেকে ৬০,০০০ টাকা দামের গরুর চাহিদা বেশি।

অপরদিকে গরু ক্রয় করতে আসা রেজওয়ান আহমদ জানান, গরুর যথেষ্ট দাম রয়েছে, অনেক বিক্রেতা অতিরিক্ত দাম চাচ্ছেন। তবে বাজারে পছন্দসই গরু যথেষ্ট পরিমাণে এসেছে।

হাট সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, কাজিরবাজার কোরবানীর পশুর মাঠ পরে অন্য সবগুলো হাটে ভালো কেনাবেচা হয়েছে। শেষ দিনে তারা আরও ভালো বিক্রির আশা করছেন।