রবিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

একটু থামুন দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য

একটু থামুন দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য

.
হাফিজুল ইসলাম লস্কর :: মাহমুদুল্লাহ, ইমরুল ও মুশফিকের কাধেঁ ভর করে আফগান জুজু কাটিয়ে উঠলো বাংলাদেশ। এবং মুস্তাফিজ ও মাশরাফির বোলিং নৈপুণ্যে ৩রানে জিতলো বাংলাদেশ।
.
পরিশেষে নির্বাচকদের উদ্দ্যেশ্যে বলতে চাই, গুরুত্বপুর্ন সিরিজে বিশেষ করে এশিয়া কাপের মতো টুনামেন্টে নবীরদেরকে ঠেলে দিয়ে তাদের উজ্জল ভবিষ্যত নিয়ে চিনিমিনি খেলবেন না।

সেই সাথে একই সাথে তিন/চার নবীন খেলোয়ারকে অভিষেক করিয়ে দেওয়ার তামাশা বন্ধ করুন। দলের প্রয়োজনে একজন খোলোয়ারকে অভিষেক করানো যেতে পারে। তাই বলে তিন বা চাঁর জনকে নয়।

অভিজ্ঞদের উপর থেকে হুট করে আস্তা হারিয়ে ফেলবেন না। তাতে তাদের নয় আপনাদেরই দক্ষতা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়। এই এশিয়া কাপসহ বিগত সিরিজগুলোতে এটা বারবার প্রমানিত হয়েছে প্রতিভার চেয়ে অভিজ্ঞতাই অগ্রগামী ছিল।

এই সিরিজে যে ইমরুলকে অবজ্ঞা করা হয়েছিল সেই ইমরুলই প্রমান করে দিয়েছে যে আপনারা নির্বাচকরা ভুল ছিলেন। আপনারা যে, নির্বাচক প্যানেল ভুলের উপর দাড়িয়ে টিম সিলেকশন করেন, তা যে ভুল তা একবার নয় হাজার বার শাহরিয়ার নাফিস, ইমরুল, আব্দুর রাজ্জাক, নাইম ইসলাম, আল আমিন ও মো: মিথুনরা ভুল প্রমান করেছে।

তবু কেন আপনাদের বোধোদয় হয় না তা আমরা সাধারন ক্রীড়ামোদী দর্শকদের বুঝে আসেনা। সেই সাথে আপনারা টি২০ খেলোয়ার যিনি তাকে টেষ্ট ক্রিকেটে, টেষ্ট মেজাজের খেলোয়ারকে টি২০ ক্রিকেটে অভিষেক করিয়ে অতীতে আপনাদের অযোগ্যতার প্রমান দিয়েছেন। এখন একটু এই অতি পরিক্ষা-নিরিক্ষা থেকে থামুন দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য। এবং দয়া করে যোগ্য খেলোয়ারকে যোগ্য ফরমেটে সুজোগ দিন তাও আস্তেধীরে।

সেই সাথে তাদের ভুলে যাবেন না, যাদের জন্য বাংলাদেশের ক্রিকেট এত দুর পর্যন্ত এসেছে। তুষার ইমরান, নাইম ইসলাম ও শাহরিয়াল নাফিসরা কি দোষ করেছে যে  তাদের কে টেষ্ট কিংবা ওয়ানডে ক্রিকেটে সুজোগ দেওয়া হচ্ছে না। বিশ্ব ক্রিকেটে দেখুন এর চেয়ে বেশি বয়েসি খেলোয়ালেরা দাপটের সাথে খেলে যাচ্ছে। দয়া করে তাদের অন্তত আরো তিনটি সুজোগ দেওয়া হোক।

সেই সাথে ড্যাশিং ওপেনার তামিমের সাথে বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্ভবনাময় খেলোয়ার মেহেদী মিরাজকে ওপেন করানো হোক। কারন মাশরাফীর পরে যোগ্য অধিনায়ক হতে পারেন এই মেহেদী মিরাজই। মেহেদী মিরাজ হাড-হিটার নয় সে কিন্তু ইকোনমি খেলোয়ার। তাই বাংলাদেশের ক্রিকেটের স্বার্থে তাকে দিয়ে পাচঁ থেকে সাতটি ম্যাচে ওপেন করিয়ে দেখা যেতে পারে। সেই সাথে এনামুল বিজয়কে আরো কিছু সুজোগ দেওয়া হোক।

মুমিনুর হক ও আবু হায়দার রনি বাংলাদেশের সম্পদ তাই তাদের এক ম্যাচ খেলিয়ে বসিয়ে রাখা ঠিক হয়নি। সেটা একটু ভেবে দেখুন। সব খেলোয়ারকে সমান সুজোগ প্রদান করুন তাদের প্রতিভা বিকাশ করার জন্য। সর্বোপরি বাংলাদেশ আগামী ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনারে খেলবে এই প্রত্যাশা ব্যাক্ত করে এখানেই শেষ করলাম।

.
লেখক,
হাফিজুল ইসলাম লস্কর,
নির্বাহী সম্পাদক : সাপ্তাহিক ইউনানী কন্ঠ,
প্রধান সম্পাদক : হলিবিডি টুয়েন্টিফোর ডটকম,
সম্পাদক ও প্রকাশক : দৈনিক লস্কর বার্তা।

শনিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

আর কোন নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চাইব না’ কান্নাজড়িত কন্ঠে কামরান

সিলেট প্রতিনিধি :: সিসিক নির্বাচনে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের পরাজয় নিয়ে চলছে চুলছেড়া বিশ্লেষন।
সেই সাথে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে নির্বাচনের সময়ে সিলেটের আওয়ামী লীগ নেতাদের ভুমিকা নিয়ে। নির্বাচনের পর থেকেই পরাজয়ের পেছনে তারা একে অন্যের উপর দোষ চাপাচ্ছেন।

মাটি ও মানুষের নেতা হিসেবে পরিচিত বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ছিলেন সিসিকের টানা দুইবারের মেয়র এবং সিলেট পৌরসভার চেয়ারম্যান। কিন্তু বিগত দুই সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর কাছে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে কামরানকে। ২০১৩ সালের নির্বাচনে পরাজয় মেনে নিলেও বিগত নির্বাচনে মাত্র ছয় হাজার ভোটের পরাজয়ে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন কামরান।

এ অবস্থায় সিলেটে আলোচনায় উঠেছিল দলীয় সমন্বয়হীনতায় সিটি নির্বাচনে পরাজিত কামরান পেতে পারেন আরো বড় কিছু। ধারণা করা হচ্ছিল হয়ত উপহার হিসেবে দেশের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সংসদীয় আসন সিলেট-১ থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দেখা যেতে পারে তাকে।
এমনটার দাবী জানাচ্ছিলেন তার অনুসারী নেতাকর্মীরাও।

সিটি নির্বাচনের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে সিলেট-১ আসনে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে লেখালেখি করছেন তারা। এমন গুঞ্জন ছিল নগরজুড়ে।
কিন্তু সেই গুঞ্জন নিজেই উড়িয়ে দিয়েছেন স্বয়ং কামরান।

গত বৃহস্পতিবার সিলেটের ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারী মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শোক সভায় সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে কামরান বলেছেন- ‘আমার জন্য সিলেটবাসী অনেক কষ্ট করেছেন। আমাকে বার বার ভোট দিয়েছেন। আজ আমি আপনাদের সামনে বলছি আমার আর মনোনয়নের দরকার নেই। আমি আর কোন নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চাইব না’।

কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন- ‘আজকে এই মঞ্চে সিটি মেয়র হিসেবে আমার বসার কথা ছিল। কিন্তু, এ বিজয় আমি আপনাদের উপহার দিতে পারিনি। আমি আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমি আর কাঁদতে পারিনা, আমি কাঁদলে কর্মীরা কাঁদে, এই সিলেটের মানুষ কাঁদে’।

এদিকে কামরানের পরাজয় নিয়ে বিব্রত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগও। সারাদেশে সিটি নির্বাচনগুলোতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হলেও পরাজয় ঘটেছে সিলেটে। আর পরাজয়ের পেছনে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট এবং নেতাকর্মীদের প্রচুর অভিযোগ পড়েছে কেন্দ্রে। এসব বিষয় ক্ষতিয়ে দেখতে সিটি নির্বাচনের এক মাসের মাথায় গত বৃহস্পতিবার সিলেটে এসেছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীর পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, এনামুল হক শামিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সদস্য অধ্যাপক রফিকুর রহমান।

বঙ্গবীরের শততম জন্মদিন আজ

সিলেট প্রতিনিধি :: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক ও মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি বঙ্গবীর জেনারেল এম এ জি ওসমানীর শততম জন্মদিন আজ (০১ সেপ্টেম্বর)। ১৯১৮ সালের এই দিনে বাবা খান বাহাদুর মফিজুর রহমানের কর্মস্থল সুনামগঞ্জে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার গ্রামের বাড়ি সিলেটের বালাগঞ্জে।
সিলেটসহ সারাদেশের গর্ব এই কিংবদন্তির শততম জন্মবার্ষিকী বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে পালিত হচ্ছে।

জেনারেল এমএজি ওসমানী তাঁর যৌবনকালে তৎকালীন ব্রিটিশ আর্মিতে যোগ দেন। তিনি ছিলেন বাঙালিদের মধ্যে ব্রিটিশ আর্মির সর্বকনিষ্ঠ মেজর। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে থাকাকালে ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। চট্টগ্রাম সেনানিবাসের প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন কর্ণেল হিসেবে।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে এমএনএ নির্বাচিত হন তিনি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর প্রধান হিসেবে অসামান্য কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালের ২৬ ডিসেম্বর তাকে বাংলাদেশ আর্মেড ফোর্সের জেনারেল পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৭২ সালে দায়িত্ব থেকে অবসর নিয়ে বঙ্গবন্ধু সরকারের মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন।

১৯৭৩ সালের সংসদ নির্বাচনেও বিজয়ী হন তিনি। ১৯৭৪ সালে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। পরে বাকশাল গঠনের প্রতিবাদে ১৯৭৫ সালে সংসদ সদস্য পদ ও আওয়ামী লীগের সদস্যপদ ত্যাগ করেন। সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ২৯ আগস্ট খন্দকার মোশতাক আহমেদের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা পদে নিয়োগ পান। তবে ৩ নভেম্বর জেলহত্যার ঘটনার পর ওই পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৭৬ সালে জাতীয় জনতা পার্টি নামে রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।

এমএ জি ওসমানী ১৯৭৮ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সম্মিলিত বিরোধী দলের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। পরে ১৯৮১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। ১৯৮৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান।

বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দল এবং সংগঠন বঙ্গবীর এমএজি ওসমানীর জন্মবার্ষিকী পালনে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। কর্মসূচিতে রয়েছে সিলেট শহরের হজরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ওসমানীর কবর জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ ও শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, আলোচনা সভা প্রভৃতি।